এম জাফরান হারুন::
পটুয়াখালীর বাউফলে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ১৪ জন আহত হয়েছে। এসময় একজন সেনা সদস্যও গুরুতর জখম হয়েছে। মুমুর্ষু অবস্থায় ৩ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিন কনকদিয়ার ৯নং ওয়ার্ডে এ ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার দক্ষিন কনকদিয়া হাওলাদার বাড়ীর আনোয়ার হোসেন ও আবদুর রহিম গংদের মধ্যে সোয়া তিন শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছিল। স্থানীয়ভাবে উভয় পক্ষের মানিত শালিশ মাহবুব খান, সালাম মোল্লা ও সার্ভেয়ার ফরহাদ তালুকদার বিরোধপূর্ণ জমির বিষয় আনোয়ার গংদের পক্ষে রায় প্রদান করেন। কিন্তু এ রায় মনপুত হয়নি রহিম গংদের। তিনি (আবদুর রহিম সেনা সদস্য) ছুটিতে এসে বাউফলের অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ করেন।
বিষয়টি সেনা বাহিনী আমলে নিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি প্রতিক কুমার কুন্ডকে দায়িত্ব দেন। ভূমি অফিস সকল কাগজ পত্র পর্যালোচনা করে আনোয়ার গংদের পক্ষে রায় প্রদান করেন। আর এতেই চরম ক্ষিপ্ত হন সেনা সদস্য আবদুর রহিম।
তাই তিনি শনিবার দুপুর ১২টার দিকে বিলবিলাস, মদনপুরা ও কনকদিয়া এলাকার প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে দেশীয় অস্ত্র লাঠি ও রামদা নিয়ে আনোয়ার গংদের বসত ঘরে হামলা চালানো হয় সেনা সদস্য আবদুর রহিমের নেতৃত্বে। বসত ঘরে রক্ষিত সকল মালামাল ভাংচুর করে হামলাকারীরা।
এ সময় এলোপাতারি ভাবে বাচ্চাদের উপরও হামলা করে তারা। বাঁধা দিলে মোসাঃ রিনা (২৮), মোসা শিরিনা বেগম (২৫), মো. শহিদ হাওলাদার (৫২), মো. মনির হোসেন (৩৫), মো. তানভির হোসেন (২০), মো. খলিল হোসেন (৪৫), ফজলুল করিম (৩৭), শামীম হাওলাদার (৪৫) ও ছোট্ট শিশু সাদিয়া (৯) সহ প্রায় ১১ জন আহত হয়। ওই সময় সেনা সদস্য আবদুর রহিমও গুরুতর আহত হন।
দুপুর ১টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। ওই সময় তারা ৬ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসেন। আহতদের মধ্যে রিনা. শিরীন ও শহীদের অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎস্যার জন্য বরিশাল শের-ই- বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, আবদুর রহিম যখনই এলাকায় আসেন তখনই বখাটে ছেলেদের নিয়ে এলাকার ভিতরে ত্রাসের সৃষ্টি করেন। অপরদিকে আবদুর রহিম জানান, তারা আওয়ামী দোসর, আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে আমাদের জমি দখল করে নিয়েছে। আমি আমার পূর্ব পুরুষের সম্পত্তি রক্ষার জন্য দখলে গেলে তারা আমার উপর হামলা করে আমাকে গুরুরতর জখম করে।
এবিষয়ে বাউফল থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।