এম জাফরান হারুন, নিজস্ব প্রতিবেদক, পটুয়াখালী::
র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, চুরি ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকান্ড রোধে অতি দ্রুততার সাথে আসামি গ্রেফতার করে দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে যা সাধারণ জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে ।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৮, বরিশাল সদর কোম্পানী এবং পটুয়াখালী ক্যাম্পের একটি বিশেষ যৌথ আভিযানিক দল মঙ্গলবার (২রা এপ্রিল) বেলা ২টার দিকে বরিশাল নগরীর কোতোয়ালি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পটুয়াখালী সদর থানার সেই চাঞ্চল্যকর ১৩ বছরের শিশু ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ধর্ষক মোঃ শফিক হাওলাদার (২২), পিতা-মোঃ জসিম হাওলাদার, সাং- সিকেওয়াবুনিয়া, থানা- পটুয়াখালী সদর’কে গ্রেফতার করেছে। পরে গ্রেফতারকৃত আসামিকে পটুয়াখালী সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাব-৮ জানান, ভিকটিম শিশু ১৩ বছর বয়স কে গত ২৯/০৩/২০২৪ তারিখ দুপুর অনুমান ২টার সময় পটুয়াখালী সদর উপজেলার বড় বিঘাই ইউনিয়নের দক্ষিণ তিতকাটা গ্রামের নিজ বসত বাড়ি থেকে প্রতিবেশীর ঘরে পিয়াজ আনার জন্য গেলে আসামি ফাকা বাড়িতে ওই শিশুকে একা পেয়ে কৌশলে ঘরের ভিতরের নিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় ওই শিশুর ডাকচিৎকারে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে গেলে ধর্ষক কৌশলে পালিয়ে যায়। এঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য এবং জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে ভিকটিম ওই শিশুর মা বাদী হয়ে ২৯শে মার্চ-২০২৪ ইং তারিখ পটুয়াখালী সদর থানার একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরে গ্রেফতারকৃত আসামিকে পটুয়াখালী সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে র্যাব-৮ আরও জানান, বরিশালের বাকেরগঞ্জ থানার বাসিন্দা ১৫ বছরের এক কিশোরীকে পতিতা বৃত্তির উদ্দেশ্যে অপহরণ করে নিয়ে আসা অপহরণকারী পাচার চক্রের মূলহোতা মোঃ ইমন হোসেন (২০), পিতা-মোঃ হাবিবুর রহমান, সাং- জলিশা, থানা – দুমকিকে সহ আরও দুইজন নারী পাচার চক্রের সহযোগী ১। তানিয়া (২৬), পিতাঃ মৃত আনিচ আলী, সাং চরপাতালীধী, থানাঃ পালং, জেলাঃ শরীয়তপুর ও ২। জাহানারা বেগম (২৭), পিতাঃ জাহাঙ্গীর বেপারী, সাং পুরান বাজার, থানাঃ মাদরীপুর সদর, জেলাঃ মাদারীপুরকে পটয়াখালী জেলার সদর এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৮ বরিশাল এবং পটুয়াখালী ক্যাম্প। এসময় অপহৃত ১জন ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও জানান, গত ১১ মার্চ ২০২৪ ইং তারিখে ভিকটিম জান্নাতি আক্তার (১৫) বাকেরগঞ্জ মহিলা মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে নিখোজ হয়। এ মর্মে ভিকটিমের পিতা মোঃ আবুল কালাম ১২ই মার্চ ২০২৪ ইং তারিখে বাকেরগঞ্জ থানায় একটি নিখোজ জিডি করেন।
গ্রেফতারের পর তারা স্বীকার করে যে, আসামি মোঃ ইমন হোসেন ভিকটিমকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অন্যান্য আসামিদের প্রত্যক্ষ সহযোগিত ও প্ররোচনায় গত ১১/০৩/২০২৪ তারিখ বেলা ১টার সময় ভিকটিমকে বাকেরগঞ্জ পৌরসভাধীন ০৬ নং ওয়ার্ডস্থ ভরপাশা টিএন্ডটি রোড মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সামনে পাকা রাস্তার উপর থেকে জোরপূর্বক মানব পাচারের উদেশ্যে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে ০২ নং ও ০৩ নং আসামির নিকট মাত্র ত্রিশ হাজার টাকার বিনিময়ে পতিতা বৃত্তির উদ্দেশ্যে বিক্রি করে দেয়। কিন্তু রমজান মাসে পতিতাবৃত্তি বন্ধ থাকায় আসামিরা ভিকটিমকে নানাভাবে পতিতাবৃত্তির জন্য চাপ ও প্ররোচনা দিয়ে আসছিল।
পরে গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।